১ম পর্ব |
২য় পর্ব |
৩য় পর্ব |
৪র্থ পর্ব |
আজকে এই পর্বে আমি বলব বাল্ট্রা দ্বীপের পরিস্থিতি বর্তমানে কেমন। অর্থাৎ, বর্তমানে সেখানে বাড়িঘর আছে কিনা? কেও বাস করে কি না? ওই দ্বীপের মালিকানা কোন দেশের? সেখানে অর্থনীতির কি পরিস্থিতি? এসব সম্পর্কে আজকে আলোচনা হবে।
তো চল বন্ধুরা, শুরু করা যাক আজকের এই পর্বটা।
বন্ধুরা বাল্ট্রা দ্বীপ কোথায় অবস্থিত, তোমাদের মনে আছে?
গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি একটি দ্বীপ হচ্ছে এই বাল্ট্রা দ্বীপ। এই দ্বীপ তাই সমস্ত দ্বীপে যোগাযোগ রক্ষা করার একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠে।
আমরা জানি যখন ২য় বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল, তখন ফ্রান্সিস ওয়েগনার এই দ্বীপকে আবিষ্কার করেন। এই কাহিনী নিয়ে ১ম পর্ব ও ২য় পর্ব লিখেছিলাম।
তারপর সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর এয়ার ফোর্স বেস তৈরি হয়। যুদ্ধের পর এই দ্বীপটিকে ইকুয়েডর সরকারের কাছে হস্তানান্তর করা হয়।
এই ইকুয়েডর একটি রাষ্ট্র। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে এটি উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত। এর রাজধানী হলো কুইতো।
এই ইকুয়েডর সরকার এই দ্বীপটিকে ফেলে রাখেন নি। এখানে তারা মূলভূখণ্ডের সাথে আকাশপথের যোগাযোগ রক্ষার জন্য একটি বিমানবন্দর তৈরি করে। ১৯৮৬ সালে এখানে একটি বাণিজ্যিকভাবে বিমানবন্দর গড়ে তোলে দেশটি। কিন্তু কেন এখানেই বিমানবন্দর গড়ে তোলা হয়েছিল?
এর কারণ হলো এটিতে কোনো বড় গাছপালা নেই। ১ম পর্বেই বলেছিলাম এটি হচ্ছে ন্যাড়া দ্বীপ। ফলে বিমানবন্দর তৈরি করলে কোনো গাছপালা কাটতে লাগবে না। আবার এটি হচ্ছে ওই দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি দ্বীপ। তাই যোগাযোগ সহজেই করা যায়।
তো এই বিমানবন্দর তৈরি করার পর এর নাম রাখা হয় সিমোর বিমানবন্দর।
এখানে শুধু বিমানবন্দরই নয়, দুটি ফেরিঘাটও স্থাপন করা হয়েছে।
২০১১ সালে দেশটির সরকার এই বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত নেই এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে। ২০১৩ সালে এর কাজ শেষ হয়। এখানে যাতায়াতের জন্য অনেক কিছুর ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বাস রয়েছে যাতায়াতের জন্য। এখানে পর্যটকদের আনাগুনা প্রায় লেগেই থাকে। রাতের বেলা যাতে তাদের কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য সেখানে কতিপয় কিছু হোটেলের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
এই দ্বীপে কোনো প্রাণীই বাস করতে চাইতো না। তাই এটিতে কোনো প্রাণীই ছিল না। বিজ্ঞানীরা কৃত্তিমভাবে এখানে ইগুয়ানা প্রজাতিকে বাস করার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে।
ধারনা করা হয়, এই দ্বীপে আগেও এই প্রজাতির প্রাণীগুলো বাস করত। কিন্তু তারা বিলুপ্ত হয়ে যায় এই দ্বীপ থেকে। তাই বিজ্ঞানীদের প্রচেস্টায় এখানে এখন এই প্রজাতির বেশ কিছু প্রাণী বাস করে।
যদিও এখনো কোনো মানুষ সেখানে ঘর তৈরি করে বাস করতে চায় না, তবুও সেই জনমানবহীন দ্বীপ আজ একটি ব্যাস্ত বিমানবন্দর। প্রতিনিয়ত অনেকে যাত্রি যাচ্ছে সেই দ্বীপের বিমানবন্দরে।
পৃথিবীর অজানা জিনিসের কোনো শেষ নেই, নেই তার রহস্যরও শেষ। তেমনি এই বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্য এখনো উন্মোচিত হয় নি, তবুও সেটি এখন একটি অতি কর্মব্যাস্ত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
আশা করা যায়, কোনো এক সুর্যাদয়ে হয়তো এই বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্য উন্মোচিত হবে জনসম্মুখে।
তথ্যসূত্রঃ bijnana-o-bijnani.co.in এবং বাল্ট্রা দ্বীপ উইকিপিডিয়া
ইমেইজ ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com
0 মন্তব্যসমূহ