বন্ধুরা বাল্ট্রা দ্বীপ একটি রহস্যে ঘেরা আশ্চর্য দ্বীপ। এই দ্বীপ সম্পর্কে কল্পনা-জল্পনার কোনো শেষ নেই। এই দ্বীপ নিয়ে লোকের মাঝে যেমন কাল্পনিক কাহিনী রয়েছে, বিজ্ঞানীদের মাঝেও রহস্য সম্পর্কে ধারনা আছে। কিন্তু সেই রহস্য বিজ্ঞানীরা এখনও ভেদ করতে পারে নি। এটি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। আশা করা যায় সুদূর ভবিষ্যতে হয়তো এর রহস্য উদ্ঘাটন হলেও হতে পারে।
২য় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সিস ওয়েগনার যখন গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপের মধ্যে গড়ে উঠা সেনা ছাউনিতে অফিসার পদে নিয়োযিত ছিলেন, তখন তিনি বিভিন্ন দ্বীপের সেনা ছাউনি পরিভ্রমণকালে ওই বাল্ট্রা দ্বীপ দেখতে পান এবং তা জনসম্মুখে নিয়ে আসেন।
এই সম্পর্কে আমি ইতোমধ্যে ৩টা আর্টিকেল লিখেছি। সেখানে এই দ্বীপের অবস্থান কোথায়? এর আবিষ্কার কি করে হলো? বিজ্ঞানীরা কি ধরনের রহস্য উদ্ঘাটন করল? বাল্ট্রা দ্বীপের সম্পর্কে কি বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিল? তা ব্যাখ্যা করেছি।
তোমাদের সুবিধার্থে আমি ওই ৩টা আর্টিকেল এর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিচ্ছি। তোমরা সেগুলো পড়ে আসতে পারো।
আজকে আমি লিখব ওই দ্বীপকে কেন মৃত্যুপুরী, মৃতদ্বীপ বলা হয়, সেই সম্পর্কে।
তো চল বন্ধুরা শুরু করা যাক আজকের মৃত্যুপুরীর তথা বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্যময় কাহিনী।
বাল্ট্রা দ্বীপের আশে পাশে যত দ্বীপ আছে সবগুলোতেই প্রায় মানুষের বাস। কিন্তু এখানে মানুষ এখনো বাস করতে চায় না। এর পিছনে কারণটা কি?
আশেপাশের দ্বীপগুলোর অধিবাসীদের জিজ্ঞাসা করে যা তথ্য পাওয়া গেছে তা শুনলে তোমাদের চোখ কপালে উঠবে। জনশ্রুতিতে জানা যায়,
“এটা প্রায় কয়েকশ বছর আগের কথা। চিরসবুজে ঢাকা ছিল বাল্ট্রা দ্বীপ। চারদিকে সবুজের সমাহার। এর আশেপাশের দ্বীপের মতো গাছপালা, প্রাণী সব ছিল এই দ্বীপে। এমনকি মানুষও বাস করত। খুবই শান্তিতে তারা বাস করত। তাদের মধ্যে ছিল ভাব ভালবাসা। মিষ্টি সম্পর্কে সবাই বাঁধা ছিল। হাসি খেলায় মেতে উঠত সবাই। তারা বিভিন্ন গাছের ফল পেরে খেত। কেও কেও ফসলও ফলাতও। প্রাণী শিকার করেও খেত অনেকে। আবার দ্বীপের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল থেকে মাছ ধরে খেত। সবাই সুখেই ছিল।
কিন্তু এই সুখ তাদের বেশীদিন টিকল না। অচিরেই তারা শিকার হলো অজানা এক রোগের।
বাল্ট্রা দ্বীপে হঠাৎ দেখা দিল অজানা এক রোগের মহামারি। শত শত লোক মরতে লাগলো। পশুপাখি যারা ছিল, তারাও মরতে লাগলো। মানুষের মনের মধ্যে এক বিশাল, ভয়ংকর আতঙ্ক বাসা বাঁধল।
এই আতঙ্কে সবাই ওই দ্বীপ ছেড়ে পালালো। যারা পালাতে পারেনি, তারা মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়ল। যেসব পাখি সুস্থ ছিল, তারাও পালালো।
অচিরেই জনবসতিপূর্ণ দ্বীপটি জনমানবহীন হয়ে গেলো।”
আশেপাশের গ্রামবাসীদের কাছ থেকে আরও শুনা যায়,
“এরপর আশেপাশের দ্বীপের কোনো মানুষ ওই দ্বীপের পাশ দিয়ে গেলে নাকি কোনো এক অশুভ শক্তির উপস্থিতি টের পায়। কেও ওই দ্বীপে প্রবেশ করলে তার শরীর হালকা হয়ে যায়। সে যেন অজানা এক পৃথিবীর মধ্যে হারিয়ে যায়। ধীরে ধীরে তার চেতনাকে যেন কেও গ্রাস করে ফেলছে।
এই চেতনার কথা যখন আশেপাশের মানুষরা জানতে পারে তখন তারা মনে করে এটি একটি মৃত্যুপুরী, যা মানুষকে অন্য এক জগতে নিয়ে যায়, হয়তো মৃত্যুর কোনো দেশে।”
বন্ধুরা এর আগের পর্বে আমি ফ্রান্সিস ওয়েগনার এর এরকম অনুভূতির কথা বলেছিলাম।
তার মানে ওই বাল্ট্রা দ্বীপে গেলে যে এরকম অনুভূতি হয় তা সত্য। তাহলে অন্যান্য দ্বীপের গ্রামবাসীদের কথাগুলো কিছুটা হলেও সত্য।
এরপরে যা ঘটে,
“আশেপাশের দ্বীপের মানুষেরা তখন থেকে এই বাল্ট্রা দ্বীপকে মৃত্যুপুরী হিসেবে আখ্যায়িত করে। কেও কেও একে মৃত্যুর দ্বীপ বলেও আখ্যায়িত করে। ভয়ে কেও এখানে বাস করতে চায় না। কেও এই দ্বীপের ধারের কাছেও আসে না। সমুদ্রে কোনো কাজে আসলেও, এর পাশ দিয়ে কেও যায় না।”
শুধু মানুষেরা নয়, পশুপাখিরা পর্যন্ত একে এড়িয়ে চলে। তাই আজও এই দ্বীপ হাহাকার করে। যেন এর কিছুই নেই। যেন নীরব, নিশ্চুপ এই দ্বীপ।
কিন্তু বন্ধুরা বর্তমানে বাল্ট্রা দ্বীপের কি অবস্থা বিদ্যমান? সেখানে কি মানুষ বাস করতে শুরু করেছে নাকি? এই দ্বীপ বর্তমানে কার মালিকানাধীন?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাও?
পরের পর্বে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আজকের পর্ব কেমন লাগলো, তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবে না যেন।
So, আজকে এ পর্যন্তই। দেখা হবে এর পরের পর্বে।
ততদিন সুস্থ থাক, ভালো থাক।
ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্যসূত্রঃ bijnan-o-bijnani.co.in এবং বাল্ট্রা দ্বীপ উইকিপিডিয়া
ইমেইজ
ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com
1 মন্তব্যসমূহ
ভালা
উত্তরমুছুন