বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্যের কোনো শেষ নেই। মানুষের মাঝে এটি মৃতদ্বীপ হিসেবে পরিচিত হলেও, বিজ্ঞানীরা একে গবেষণা করে যা জানতে পেরেছেন তা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে। এই দ্বীপের রহস্যের পিছনে আসলে কত বড় রহস্য লুকায়িত আছে, তা এই পর্বে তোমরা জানতে পারবে।
এর আগের ২টা পর্বে আমি এই দ্বীপের অবস্থান, আবিষ্কারসহ আরও কিছু রহস্যজনক কাহিনী ব্যাখ্যা করেছি।
তোমাদের সুবিধার্থে আমি নিচে এর আগের ২টি পর্বের লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। তোমরা সেগুলো দেখে পড়ে আসতে পারো, তাহলে এই পর্ব তোমরা ভালো করে বুঝতে পারবে।
যদি আগের পর্বগুলো তোমরা পড়ে এসেসো, তাহলে চল আজকের পর্ব শুরু করা যাক।
বন্ধুরা ২য় পর্বে আমরা জানতে পেরেছি, ফ্রান্সিস ওয়েগনার বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্য জনসম্মুখে নিয়ে আসেন।
এরপরেই বিজ্ঞানীরা ছুটে যান সেখানে রহস্য উদ্ঘাটন করার জন্য। এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা আরও রহস্য খুঁজে পান। একটা রহস্য ভেদ করলে আরেকটা রহস্যের মধ্যে ঢুকে পড়েন। এই দ্বীপ যেন রহস্য দিয়ে ঘেরা।
এই দ্বীপে বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা করেন এবং তার কিছু ফলাফল পান। নিচে তাঁদের কিছু পরীক্ষার কথা তুলে ধরা হলোঃ
১। একই উচ্চতাবিশিষ্ট মানুষদের কাউকে খাটো কাউকে লম্বা লাগেঃ বিজ্ঞানীরা এই দ্বীপে গিয়ে একটি পরীক্ষা করার সময় একটা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পান। তাঁরা দুজন সমান উচ্চতার মানুষকে পাশাপাশি দাঁড়াতে বলেন। মানুষ ২টা সামান্য কিছু দূরত্বের পার্থক্যে পাশাপাশি দাঁড়ায়। দাঁড়ানোর পর একটা অদ্ভুত রহস্য বিজ্ঞানীদের সামনে চলে আসে।
বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, উত্তর দিকে থাকা লোকটি কিছুটা বেঁটে বলে মনে হচ্ছে সবার। কিন্তু তারা ২ জনই তো সমান উচ্চতার। তবে কি এমন রহস্যের কারণে তাদের একজনকে বেঁটে, একজনকে লম্বা মনে হচ্ছে সবার? বিজ্ঞানীরা হতবম্ব হয়ে যান।
এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা চৌম্বক ক্ষেত্রের সাহায্য নেন। তাঁরা ব্যাখ্যা দেন যে, এই দ্বীপে কাজ করছে একটি শক্তিশালী ম্যাগ্নেট। তাঁদের ধারণা এই দ্বীপে একটি শক্তিশালী ম্যাগ্নেট ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে। এর ফলেই উচ্চতার তারতম্য হচ্ছে।
তবে এই ব্যাখ্যা কতটুকু সত্য তা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
২।এখানে হাওয়া থাকা সত্ত্বেও আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরে উঠতে থাকেঃ বিজ্ঞানীরা এখানে পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনে আগুন জ্বালিয়েছেন। এভাবে একদিন আগুন জ্বালানোর সময় তাঁরা লক্ষ্য করেন যে, আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠছে।
সবাই মনে করতেছ এটা তো সাধারণ ঘটনা। হ্যাঁ, এটা সাধারণ ঘটনা। কিন্তু সেখানে তখন অনেক হাওয়া চলছিল। এই হাওয়াতে আগুন নিভে যাওয়ার কথা। যদি নিভে নাও যায়, তবে ধোঁয়া এদিক সেদিক যাওয়ার কথা। কিন্তু ধোঁয়া এদিক সেদিক না গিয়ে, সোজা উপরে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠতে থাকে। কি আশ্চর্য ব্যাপার, তাই না?
৩। এখানে পানি উপরের দিকে গড়ায়ঃ কারো কারো মত শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে। কেও কেও কি মত দিয়েছে জানো? এখানে পানি নাকি নিচের দিকে না গড়িয়ে উপরের দিকে গড়ায়। এটা কতটুকু সত্য তা এখনো জানা যায় নি।
৪। শরীর হালকা হয়ে যায়ঃ ফ্রান্সিস ওয়েগনার এর মতবাদ পরীক্ষা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরাও বুঝতে পারে যে তাদের শরীর হালকা মনে হচ্ছে। কিন্তু এর কারণ কি? এর কারণ সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁরা ওই আগের চুম্বকীয় তত্ত্বের কথাই বলেন। তাঁরা জানান যে এখানে একটি শক্তিশালী ম্যাগনেট কাজ করে বলেই এসব কিছু ঘটতেছে।
তো বন্ধুরা এই বাল্ট্রা দ্বীপ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা, তাঁদের যুক্তি তো জানা হলো। কিন্তু এর রহস্য এখনো উদ্ঘাটিত হয় নি। এখনো বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে যাচ্ছেন।
কিন্তু এর রহস্য সম্পর্কে এর আশেপাশের দ্বীপের গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা যে তথ্য দেয়, তা শুনলে গাঁ শিউরে উঠবে।
একে মৃত্যুপুরী হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা এক অদ্ভুত কাহিনীর কথা ব্যাক্ত করে।
বন্ধুরা তোমরা কি সেই মৃত্যুপুরী তথা বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্যে ভরা কাহিনী শুনতে চাও? কমেন্ট করে মতামত দিও।
সেই কাহিনী আমি তোমাদের এর পরের পর্বে বলব।
ততদিন সুস্থ থাক, ভালো থাক।
ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্যসূত্রঃ
bijnan-o-bijnan.co.in
এবং বাল্ট্রা দ্বীপ উইকিপিডিয়া
ইমেইজ
ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ
ডিজাইনঃremove.bg&canva.com
0 মন্তব্যসমূহ