Looking For Anything Specific?

ads header

প্লেটোর বর্ণনায় "আটলান্টিস" ধ্বংস (#আটলান্টিস_রহস্য_০৬)


কল্পনা-জল্পনায় জর্জরিত সভ্যতা, বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টিকারী সভ্যতা, যাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে একাধিক হলিউড মুভি, তার নাম আটলান্টিস। কিন্তু এই আটলান্টিস ধ্বংস হলো কিভাবে, তোমরা কি তা জানো? অনেকেই জানো, আবার অনেকেই জানো না। আজকের এই পর্বে এই উন্নত সভ্যতা “আটলান্টিস” এর শেষ পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। বানিয়ে নয়, বিখ্যাত দার্শনিক “প্লেটো”র লেখা ডায়ালগ “টাইমাউস এন্ড ক্রিটিয়াস” এ যা লেখা আছে, তার বঙ্গানুবাদ অনুযায়ী লেখা হবে। তাই ঘাবরানোর কিছু নেই। নিশ্চিন্তে এটা পড়তে পারো।

বন্ধুরা, আমি এর আগে “আটলান্টিস” নিয়ে ৫টি পর্ব লিখেছি। সেসব পর্বে আমি লিখেছিলাম, এই আটলান্টিস কোথায় অবস্থিত? কে এর শাসনকর্তা? কে এটা তৈরি করে? কে এর প্রজা? কত সুন্দর দেখতে এই আটলান্টিস? আর কেই বা একে জনসম্মুখে নিয়ে আসে?

তো যারা আগের পর্বগুলো পড় নি, তাদের উচিত সেগুলো পরে আসা। আমি তোমাদের সুবিধার্থে আগের ৫টি পর্বের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি।

১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব

প্লেটোর লেখা বই অনুযায়ী,

যীশু খ্রিস্টের জন্মের আগেই নাকি এই আটলান্টিস এর বিলুপ্তি ঘটে। তাঁর মতে এই যে যীশু খ্রিস্ট আছে, তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন, তারও প্রায় ১৫০০ বছর আগে এই নগরী ধ্বংস হয়ে যায়। অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৩৫০০ বছর আগে এই আটলান্টিস ধ্বংস হয়। ভাবা যায় কত বছর আগেই এই নগরী ধ্বংস হয়েছে, আর তার কত বছর পর এই নগরীর অস্তিত্ব নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হচ্ছে। 

তো যাই হোক। এবার আসি এই নগরী ধ্বংস হলো কি করে?

আমি আগের পর্বগুলোতেই বলেছিলাম যে সমুদ্রের দেবতা “পোসাইডন” এই সুন্দর দ্বীপটিতে তাঁর স্ত্রীর জন্য প্রাসাদ তৈরি করেন। তাঁর স্ত্রীর গর্ভে ১০ টি জমজ সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানেরা যখন বড় হয়, তখন তিনি সবাইকে তাঁর রাজ্য ভাগ করে দেন। প্রত্যেক সন্তানিই দ্বীপের কোনো না কোনো অংশের শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়। আর সবচেয়ে বড় সন্তান “অ্যাটলাস” মূল অংশের শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়। যারা আগের পর্বগুলো পড়েছ, তারা নিশ্চয়ই এগুলো জানো।

তো এভাবে ভাগাভাগি শেষ হয়। বেশ সুখেই কাটছিল তাদের জীবন। কিন্তু ক্ষমতার লোভ, আর হিংসা তাদের কাল হয়ে দাঁড়ায়। বড় সন্তান “অ্যাটলাস” যে মূল অংশের তথা রাজধানীর শাসনকর্তা ছিল, সে তাঁর রাজ্যের তথা তাঁর ভাগের অংশের সীমানা বাড়াতে চাইলো। তার জন্য সে বিভিন্ন কূটনীতি বুদ্ধি ভাবা শুরু করল। একে একে সে সব দিক দিয়েই তাঁর রাজ্যের সীমা বাড়াতে শুরু করল। ফলে বাকীদের সীমা কমতে শুরু করল। এভাবে সীমা বাড়াতে বাড়াতে দ্বীপের প্রায় অনেক অংশই “অ্যাটলাস” এর আয়ত্তে চলে আসে। ফলে তাঁর নামেই ওই দ্বীপের নাম হয় “আটলান্টিস”।

সে তাঁর রাজ্যের সীমা বাড়াবে, আর বাকীরা কি বসে বসে তা দেখবে নাকি?

এবার বাকিরাও তাদের রাজ্যের সীমা বাড়াতে শুরু করল। “অ্যাটলাস” এর দিকে তো আর সীমা বাড়াতে পারবে না, কারণ “অ্যাটলাস” এর অনেক শক্তিশালী আর সুগঠিত সেনাবাহিনী ছিল। তাই তারা একে অপরের রাজ্যের সীমানা নিজের আয়ত্তে নিতে চাইলো। সেভাবে কাজে নেমেও পড়ল।

এমনিতেই কেউ “অ্যাটলাস” এর সাথে লাগতে যেত না। কারণ তাঁর বাহিনীর কাছে কেও টিকতে পারবে না। কিন্তু কেউ কেউ তবুও হিংসার বশবর্তী হয়ে “অ্যাটলাস” কে হত্যা করারও সিদ্ধান্ত নিল। শুধু তাই নয়, একে অপরকে হত্যা করে সমস্ত দ্বীপের শাসনভার নিজেরা নেওয়ার জন্য উতলা হতে শুরু করল। শান্ত-শিষ্ট আটলান্টিস দ্বীপে অজান্তেই এক বিশাল কালো মেঘ দানা বাঁধা শুরু করল। এই মেঘ যেই সেই মেঘ না, হিংসা আর লোভের ভয়ংকর এক কালো মেঘ।

এসব দেখে স্বর্গের জিউস নাকি আর সইতে পারলেন না। তিনি তাঁর দেবতাদের ডেকে এক জরুরি বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

এরপর কি ঘটেছে তা আর জানা যায় নি। কারণ প্লেটো তাঁর লেখা বইয়ের এখানে এসেই থেমে যান। হয়তো এরপর তিনি মারা যান, অথবা, অন্য কোনো কারণে হয়তো তিনি এই কাহিনী আর দির্ঘায়িত করতে চান নি।

অনেক পণ্ডিত এই কাহিনীর শেষভাগ লেখেন। তাঁদের লেখায় দেখা যায়, জিউস রেগে গিয়ে প্রচণ্ড ভূমিকম্পে এই সুন্দর আটলান্টিস দ্বীপকে ধ্বংস করে দেন। কিন্তু কে জানে, এই কথা কতটুকু সত্য?

তবে যাই হোক, বন্ধুরা তোমাদের কি মনে হয়? এই আটলান্টিস কি সত্যিই ছিল, নাকি এটি শুধু একটি কাহিনী? এর ধ্বংস কি এভাবেই হয়েছে নাকি এভাবে হয় নি? কমেন্ট করে জানাতে কিন্তু ভুলবে না কেউ।

আর হ্যাঁ, এরকম নিত্য নতুন অজানা রহস্য পড়তে, জানতে আমাদের ব্লগের পাশেই থাকবে।

ধন্যবাদ সকলকে।

তথ্যসূত্রঃ আটলান্টিস উইকিপিডিয়া

ইমেইজ ক্রেডিটঃ pexels.com

ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ