আসলে আমাদের পৃথিবীকে ঘিরে অজানা রহস্য বাসা বেঁধে আছে, যা চাইলেও আমরা ভেদ করতে পারব না। যদিও বা পারি ভেদ করতে, তবুও পুরোটা ভেদ করতে পারব না। তাই আমাদের এই পৃথিবীর অনেক রহস্য এখনো সমাধান হয়নি। সেই রহস্য রাতের আধারের মধ্যে কোথাও হয়তো লুকিয়ে আছে। রাত পেরিয়ে সূর্য পুব আকাশে দেখা দিলেও, সেই সমস্ত রহস্য তার সমাধানের দেখা দিতে চায় না। বিজ্ঞানীরা বার বার চেষ্টা করেও ফেল মেরে বসে থাকে। কারণ, বিজ্ঞানীরাও তো মানুষ, তাঁরা তো আর সবজান্তা শমসের নন।
যাই হোক, সেরকম এক রহস্য হচ্ছে এই আটলান্টিস। এই আটলান্টিস কোথায়? কিভাবে তৈরি হলো? কে এর শাসনকর্তা ছিলেন? আর কেই বা এই আটলান্টিসকে জনসম্মুখে নিয়ে আসেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমি আটলান্টিস এর রহস্য আলোচনা করেছি এর আগের ৩ টি পর্বে।
যারা আগের ৩টি পর্ব পড় নি, তারা অবশ্যই আগের ৩ টি পর্ব পড়ে আসবে। তোমাদের সুবিধার্থে আমি ওই ৩টা পর্বের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি।
বন্ধুরা, আজকের আলোচনা কি বিষয়ে হবে তা তোমরা শুরুতেই বোল্ড লেখাগুলো দেখে বুঝতে পেরেছ।
তো চল আর দেরি না করে শুরু করি আজকের পর্ব।
৩য় পর্বের পরে,
প্লেটো তাঁর লেখা এই আটলান্টিস কাহিনীতে এরপর সুন্দরভাবে সেখানকার মানুষদের জীবনযাত্রা তুলে ধরেন।
আটলান্টিস ছিল স্বর্গোদ্যান। অর্থাৎ স্বর্গের মতো যা চাওয়া যেত তাই পাওয়া যেত এই আটলান্টিসে। কোনো কিছুর অভাব হতো না। এখানকার প্রজারাও অনেক সুখি ছিল। তাদের মধ্যে কৃষকেরা বাস করত পাহাড়ের গাঁ ঘেঁষে। এই পাহাড় যেই সেই পাহাড় নয়। নীলচে এবং অত্যন্ত নিপুণভাবে তৈরি এসব পাহাড়। এসব পাহাড়ের গাঁ ঘেঁষে কৃষকেরা তাদের সুন্দর সুন্দর বাড়ি তৈরি করে।
এখানকার মাটিগুলো অত্যন্ত উর্বর ছিল। ফলে কৃষকেরা সুন্দরভাবে ফসল ফলাতে পারত। রকমারি ফসল বুনত তারা। এদের সেচ ব্যাবস্থাও ছিল অনেক উন্নত। তারা শুধু বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা করত না, বরং; উন্নত সেচ ব্যাবস্থা দিয়ে সুন্দরভাবে তাদের জমিতে সেচ দিত।
ফলে ফসল জন্মাতও প্রচুর পরিমাণে। ফলমূল, শাক-সবজিও হতো প্রচুর পরিমাণে। যার ফলে খাদ্যের কোনো কমতি ছিল না এখানে। কেউ অভুক্ত থাকত না। এখনকার মতো কেউ ভিক্ষা করত না। খাদ্যে ভরপুর ছিল এই আটলান্টিস।
সৌন্দর্যের কথা আর কি বলব। সবুজ শ্যামলে ভরা ছিল এই দ্বীপ। নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজানো থাকতো মাঠের পড় মাঠ। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিল নানা রঙের ফুলের সমারোহ। পাহাড়, সমুদ্র আর অরণ্য দিয়ে ঘেরা এই আটলান্টিস ছিল অনেক সুন্দর একটি দ্বীপ। এখানে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদ পাওয়া যেত। সোনা, রুপা, হীরা, মণিমুক্তা দিয়ে ভরপুর এই দ্বীপ। এখানে আরও একটি ধাতু পাওয়া যেত। এই ধাতুটির নাম ওরিক্যাল।
কিন্তু এটি কোন ধাতু, তা আজ পর্যন্ত জানা সম্ভব হয় নি। এই ওরিক্যাল নামক অজানা ধাতুটি খনি থেকে সংগ্রহ করা হতো। সোনার পরেই ছিল এই ওরিক্যাল ধাতুর অবস্থান। এখানে এসব ধাতুর কোনো কমতি ছিল না।
জন্তু-জানোয়ার ছিল মানুষের পোষ। এখানে অবাধে হাতি-ঘোড়াসহ বিভিন্ন জীবজন্তু বিচরণ করে বেড়াতো। কেউ এদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত কখনোই হতো না। জীবজন্তু আর তাদের মাঝে ভালোবাসার এক মহাবন্ধন গড়ে উঠেছিলো।
এখানকার রাজধানী ছিল সবুজ ঘেরা এক পাহাড়ের চূড়ায়। এখানে রাজপ্রাসাদে থাকতেন অ্যাটলাস। তিনি ছিলেন এই দ্বীপের মূল শাসক। তাঁর বাকি ভাইয়েরা এই দ্বীপের অন্যান্য অংশে শাসন করত।
তো প্লেটোর লেখা অনুযায়ী এই ছিল আটলান্টিস দ্বীপের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
বন্ধুরা, তোমরা কি এই আটলান্টিস দ্বীপের নাগরিকদের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চাও? এই আটলান্টিস দ্বীপে কি কি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে তা জানতে চাও? তবে তার জন্য এর পরের পর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আশা করি খুব শীঘ্রই আমি ৫ম পর্ব Publish করব।
ততদিন সুস্থ থাক ভালো থাক।
ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্যসূত্রঃ আটলান্টিস উইকিপিডিয়া
ইমেইজ ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com
0 মন্তব্যসমূহ