আটলান্টিসকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনার কোনো শেষ নেই। প্লেটোর লেখা বই অনুযায়ী এর নাগরিকদের ছিল অসম্ভব সব ক্ষমতা। বর্তমান যুগেও যা কল্পনাতীত, এমন সব ক্ষমতা ছিল আটলান্টিসের অধিবাসীদের। ডিজিটাল যুগের থেকেও জ্ঞান-সভ্যতায় এগিয়ে ছিল তারা। তারা মানে আটলান্টিসের নাগরিকরা/অধিবাসীরা।
আমি এর আগের ৪ টি পর্বে লিখেছিলাম, কি এই আটলান্টিস? কোথায় অবস্থিত? কিভাবে সৃষ্টি হলো? এর শাসনকর্তা কে? এর প্রজা কে? এর সৌন্দর্য কেমন? আর কে বা এই আটলান্টিসকে জনসম্মুখে নিয়ে এলো?
এসব প্রশ্নের উত্তর সংবলিত বিস্তারিত তথ্য আমি খুব সুন্দরভাবে এর আগের ৪টি পর্বে লিখেছি। যারা তোমরা ওই ৪টি পর্ব পড় নি, তারা অবশ্যই আগের ৪টি পর্ব পড়ে আসবে। তোমাদের সুবিধার্থে আমি আগের ৪টি পর্বের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি।
১ম পর্ব ২য় পর্ব ৩য় পর্ব ৪র্থ পর্ব
তো কথা না বাড়িয়ে চল শুরু করা যাক আজকের পর্ব।
৪র্থ পর্বের পর, প্লেটোর লেখা বই অনুযায়ী,
আটলান্টিসকে ঘিরে ছিল অনেক সুন্দর সুন্দর কারুকার্য করা দালান। সুন্দর সুন্দর প্রাসাদ ছিল। আরও ছিল আকর্ষণীয় ধর্মালয়। তাদের বন্দরগুলোও ছিল অনেক উন্নত। তারা তাদের সমুদ্র দেবতার মূর্তিও তৈরি করেছিল। খুব নিপুণভাবে, সোনা-রুপা দিয়ে বানিয়ে ছিল সেই মূর্তি। সেটা রাজধানীর কাছে একটা উঁচু জায়গায় স্থাপিত করেছিল। এর আগের পর্বেই বলেছিলাম, রাজধানীটি ছিল একটা পাহাড়ের চূড়ায়। তো সেই পাহাড়ের চারপাশে পরিখা খনন করা হয়েছিল। কেন জানো? তাদের রাজধানীকে শত্রুর হাত থেকে বাঁচাতে। তাদের বুদ্ধিও ছিল মারাত্মক। তারা পরিখাগুলোকে পরস্পরের সাথে খাল দিয়ে সংযুক্ত করে। বাইরের যে পরিখাটি ছিল, তা একটি খাল দিয়ে সংযুক্ত করে। কেন করে তা কি জানো?
তারা যাতে বাইরের দেশের সাথে ব্যাবসা-বাণিজ্য করতে পারে, তার জন্য এরকম বুদ্ধি খাটিয়েছে তারা। কিভাবে এটা করল? আসলে বাইরের খালটিকে তারা সমুদ্রের সাথে সংযুক্ত করে। ফলে সমুদ্রপথে দূর দেশ, বাইরের দেশের সাথে ব্যাবসা-বাণিজ্য করতে তাদের কোনো সমস্যাই হতো না।
এর আগের পর্বে গ্রামীণ কৃষকদের ঘর-বাড়ির কথা বলেছি। নগরী তথা শহরের বাড়িগুলো আরও অনেক সুন্দর। দামি ধাতুর সুন্দর কারুকার্যে সজ্জিত ছিল বাড়ির দেওয়ালগুলো। প্রত্যেক বাড়িতে প্রায় সোনার মূর্তি দেখা যেত। বাড়িগুলোতে ছিল আধুনিক সব ব্যাবস্থা। এখনকার মতো অনেক ডিজিটাল জিনিসের ব্যাবস্থা ছিল তাদের বাড়িতে।
এখন আসি, নাগরিকদের ক্ষমতা সম্পর্কে।
১) তাদের স্থাপত্য থেকে জানা যায়, তাদের মধ্যে কেউ কেউ দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ছিল।
২) তাদের উন্নত কৃষিব্যাবস্থা থেকে বুঝা যায়, তাদের মধ্যে কেউ হয়তো কৃষিবিদও ছিল।
৩) তাদের অনেক বড় একটি সুগঠিত এবং বিচক্ষণশীল সেনাবাহিনী ছিল।
৪) কারো কারো মতে তাদের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাও ছিল।
এবার আসা যাক অদ্ভুত জিনিস সম্পর্কে।
তাদের ওখানে ঝর্ণা ছিল। সবাই বলবে, এটা তো স্বাভাবিক বিষয়। ঝর্ণা তো এখনো আছে। না, আমি শুধু ঝর্ণার কথা বলছি না। তাদের ঝর্ণা ছিল অন্য রকম। গরম পানি আর ঠান্ডা পানি একই ঝর্ণায় প্রবাহিত হতো।
কি বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না হবারই কথা। কিন্তু প্লেটো তার লেখা বইয়ে এমন ঝর্ণার কথা তুলে ধরেছেন, যাতে ঠান্ডা পানি আর গরম পানি একই সাথে প্রবাহিত হয়। কি বিস্ময়কর ব্যাপার, তাই না, বন্ধুরা?
এসব বর্ণনা ছিল প্লেটোর লেখা বই “টাইমাউস এন্ড ক্রিটিয়াস” এ। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ এই আটলান্টিসকে নিয়ে যে কত রকমের উপন্যাস লিখেছে, আর তাতে যে কত রকমের মালমসলা মিশিয়ে পাঠকদেরকে তাদের লেখা উপন্যাস পড়তে দৃষ্টি আকর্ষিত করেছে, তার নেই কোনো আসল হিসাব।
বন্ধুরা, তোমরাও কি জানতে চাও, ওইসব লেখকদের লেখা বইয়ে কি লেখা আছে? আটলান্টিস সম্পর্কে তারা কি ধরণের উপখ্যান তৈরি করেছে? অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে। পরবর্তীতে আমি সেই সম্পর্কে লিখব।
তবে এর পরের পর্বে আমি এই আটলান্টিস কিভাবে ধ্বংস হলো সে বিষয়ে লিখব। যেহেতু আমি বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক প্লেটোর লেখা বই অনুসারে এগুচ্ছি, আর প্লেটোর লেখা বইয়ে এরপর এই কাহিনীর ধ্বংস হওয়ার কথা আছে, তাই এরপরের পর্বে আমি আটলান্টিসের ধ্বংস হওয়া নিয়ে লিখব।
আজ তাহলে এই পর্যন্তই।
ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্যসূত্রঃ আটলান্টিস উইকিপিডিয়া
ইমেইজ ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com
0 মন্তব্যসমূহ