বগা লেক, যার আসল নাম “বগাকাইন হ্রদ”, বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার একটি রহস্যময় স্থান। এই লেকের সৃষ্টি নিয়ে লোকমুখে নানা কাল্পনিক কাহিনী রয়েছে। সেইসব কাহিনী কি রকম? আর সেইসব কাহিনী কতটুকুই বা সত্য? তা নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
বন্ধুরা, বগা লেক কি এবং কোথায় অবস্থিত? এর উৎপত্তি কি? এর আয়তন, বিস্তারই বা কত? এসব নিয়ে আমি আগে একটা আর্টিকেল লিখেছি। যারা তোমরা সেটা পড়নি, তারা সেটা পড়ে আসিও। আগের আর্টিকেল পড়তে “বগাকাইন হ্রদ কি?” এই Bold করা লেখাটিতে Click কর।
তো যারা পড়ে এসেছ, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছ এটা “কেওক্রাডং” পাহাড় ঘেঁষে অবস্থিত এবং এর পৃষ্ঠতল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪০০ ফুট উপরে বিদ্যমান। আর এটা দেখতে অনেকটা “আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের” মতো। ফলে অনেকে একে ড্রাগন হ্রদ বলেও থাকে। কারণ স্থানীয়দের ভাষ্যমতে বহু কাল আগে এখানে নাকি একটি ড্রাগন বাস করত।
এবার তাহলে জেনে নেই এই রুপকথার বর্ণনাটা।
“অনেক কাল আগের কথা। বাংলাদেশের বান্দরবান জেলা। এই জেলা তখন এরকম ছিল না। এত বস্তি, বাড়ি, রাস্তাঘাট কিছুই ছিল না। ছিল শুধু দুর্গম পাহাড়ের মধ্যে কতিপয় কিছু অরণ্যঘেরা বস্তি। সেই বস্তিতে বাস করত আদিবাসীর কতিপয় দল। বম, ম্রো, তঞ্চঙ্গা, ত্রিপুরাসহ বেশ কিছু আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করত সেখানে। তারা সেখানে শান্তিতেই বাস করছিল। কিন্তু হঠাৎ এমন কিছু ঘটলো যে, তাঁদের শান্তি দূরীভূত হয়ে গেল”।
কিন্তু এমন কি ঘটল, যা তাদের শান্তি কেঁড়ে নিল? জানতে নিশ্চয়ই আগ্রহ জাগছে, তাই না? তো চল আবার কাহিনীতে ফিরে যায়।
“হঠাৎ করে তাদের গ্রাম থেকে গবাদি পশুগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। তখনও তারা কিছু বুঝতে পারেনি। তারা মনে করেছিল, হয়তো এসকল গবাদি পশু অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে। হয়তো অরণ্য ঘেরা জঙ্গলের ভিতর চলে যাচ্ছে এসব পশু।
কিন্তু এটা তাদের ভুল ধারনা ছিল। কয়েকদিন পর তারা তা বুঝতে পারে। এবার শুধু গবাদি পশুই নয়, বরং; তাদের ছোট ছোট বাচ্চারাও হারিয়ে যেতে শুরু করে। পরে এমন হয় যে বড় বাচ্চারাও হারিয়ে যেতে শুরু করে যাদের বয়স আনুমানিক ১২-১৪ বছর বয়স।
গ্রামের সবাই খুব আতঙ্কিত হয়ে যায়। সবাই খুব ভয় পায়। ভয়ে সবাই তখন গ্রামপ্রধান এর কাছে যায়। গ্রামপ্রধান দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তিনি তখন তার সাঙ্গোপাঙ্গদের এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে হুকুম দেন।
খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেল, বাচ্চাগুলোর কিংবা যেসব গবাদিপশু হারিয়ে গেছে তাদের সর্বশেষ পায়ের ছাপের দেখা মিলেছে ওই ফানেল আকৃতির পাহাড়টিতে”।
বন্ধুরা যারা ১ম পর্ব পড়েছ, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, এটা কোন পাহাড়ের কথা বলছি আমি। “১ম পর্ব” লেখাটিতে ক্লিক কর তাহলে বুঝতে পারবে।
“ তো সবার আর বুঝতে বাকি রইল না যে, ওই ফানেল আকৃতির পাহাড়েই কিছু না কিছু ঘটেছে। ওই পাহাড়ে মনে হয় কিছু অদ্ভুত প্রানি বাসা বেঁধেছে। গ্রামপ্রধানের নেতৃত্বে কিছু সাহসী আর শক্তিশালী যুবক ওই পাহাড়ে লুকিয়ে উঠে। তারা দেখে তো পুরায় অবাক হয়ে যায়। তারা এমন প্রানি কোনদিনই দেখেনি।
তারা যা দেখেছে তা গ্রামের লোকদেরকে বলতে লাগে। গ্রামের লোকরা অদ্ভুত প্রানি সম্পর্কে অজ্ঞ্যাত। তাই এমন ভয়ংকর প্রানিকে তারা তাদের ভাষায় বগা বলে। আসলে ড্রাগনকে বম ভাষায় বগা বলা হয়।
তখন সাহসী যুবকরা”।
বাকি কাহিনীটা শুনতে ইচ্ছা করছে, তাই না?
চিন্তার কোনো কারণ নেই। তোমাদের জন্য আমি বাকি কাহিনীটি খুব শীঘ্রই লেখার চেষ্টা করব।
আর হ্যাঁ, বাকি কাহিনীটা পড়তে আমাদের ব্লগটিকে Follow করে রাখ, যেন পরের পর্ব বের হলে তোমরা সেটা সহজেই সবার আগে পেয়ে যাও।
ততদিন সুস্থ থাক, ভালো থাক।
ধন্যবাদ সকলকে।
0 মন্তব্যসমূহ