বন্ধুরা, বগা লেক নিয়ে মানুষের জানার শেষ নেই। এই লেকটি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় অবস্থিত। এখানে বসবাসরত অধিবাসীরা এই লেক নিয়ে কাল্পনিক এক রহস্যের জন্ম দেন। তারা এই লেক নিয়ে এমন সব কাহিনী বলেন, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বন্ধুরা, আমি এই লেকের উৎপত্তির রহস্য নিয়ে ইতোমধ্যে ৩টা আর্টিকেল তথা ৩টা পর্ব লিখেছি। সেই ৩ টা পর্বে আমি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেছি।
আরও বলেছি, এটা কোথায় অবস্থিত? এর আয়তন, গঠন এর সম্পর্কে মতামত তুলে ধরেছি।
যারা আগের ৩ টা আর্টিকেল পড়নি, তারা অবশ্যই ওই আগের ৩ টা পর্ব পড়ে আসিও।
তোমাদের সুবিধার্থে আমি আগের ৩টা পর্বের লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম।
তো বন্ধুরা, যারা আগের পর্বগুলো পড়ে এসেসো, তারা বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই এই লেক সম্পর্কে বম উপজাতিরা কি ধ্যান-ধারণা পোষণ করে।
আজকে আমি বলব, এই বগা লেক সম্পর্কে “খুমি” উপজাতিরা কি মতামত দেয়? কি ধ্যান-ধারণা পোষণ করে?
So, চল শুরু করা যাক।
ম্রো উপজাতির একটি পৌরাণিক কাহিনীতে বলা হয়েছে,
“এটা কয়েকশ বছর আগের কথা। বর্তমানে যেখানে বগা লেক বিদ্যমান, সেখানে বাস করত একটি ম্রো উপজাতির সম্প্রদায়। সেই উপজাতিরা সেখানে একটি গ্রাম গড়ে তোলে। গ্রামটি ধীরে ধীরে উন্নত হতে শুরু করে। এক পর্যায়ে গ্রামটি সমৃদ্ধ গ্রামে পরিণত হয়। সমৃদ্ধ হয় বলেই হয়তো তারা সব কিছু খাওয়াকে হালাল মনে করে খায়। এমন কোনো জিনিস নেই, যা তারা খেত না। বর্তমানে তারা থাকলে হয়তো তাদেরকে দ্বিতীয় চীনদেশীয় লোক নামে অভিহিত করত। কেননা, চিনারাও তো এমন কোনো জিনিস নাই, যা তারা খায় না। সাপ, ব্যাঙ, তেলাপকা, পচা প্রাণী, জিন্দা প্রাণী সবই খায়। বর্তমানে তোমরা যদি চীনদের উপর নজর রাখ, অথবা ইউটিউব বা ফেসবুকে তোমরা যদি চীনাদের খাবার তালিকা সন্ধান কর (তবে যারা একটুতেই বমি কর, তারা নয়), তবে তোমাদের খুবই ঘেন্না পাবে। কারো কারো বমি বমিও লাগতে পারে। এই চীনাদের মত সব কিছু খেত এই সম্প্রদায়রা।
তো যাই হোক। এভাবে তাদের দিন ভালোই চলছিল। ফ্রিতেই সব কিছু খেতে পারতো সবাই। যা ইচ্ছা তাই খাওয়া যেত। খাওয়ার ব্যাপারে কোনো বাছ-বিচার ছিল না। কিন্তু একদিন তাদের এই সর্বভুক খাওয়ার জন্য তাদেরকে অনেক বড় মাশুল দিতে হয়।
তাদের গ্রামের পাশে একটা সুরঙ্গ ছিল। অনেক বড় একটা সুরঙ্গ। এই সুরঙ্গে বাস করত এক ভয়ানক প্রাণী। খুবই ভয়ংকর ছিল এটি। জানতে চাও, এখানে কোন ভয়ানক প্রাণী বাস করত?
এখানে বাস করত বিশাল এক সাপ। কিন্তু একদিন গ্রামের লোকেরা কি করল জানো? গ্রামের লোকেরা ওই সাপটিকে ধরে ফেলল। আর ঘটা করে উৎসব করল। গ্রামের সবাই সেই উৎসবে আমন্ত্রিত হলো। সবাইকে ওই সাপের মাংস দেওয়া হলো খাওয়ার জন্য। আর সবাই সেই সাপকে মজা করে খেয়ে নিল।
ওই গ্রামে এক নাগরাজ ছিল। তার কোনো এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় হলো এই সুরঙ্গের সাপটি। নাগরাজ যখন জানতে পারল যে, গ্রামের লোকেরা সাপটিকে ধরে খেয়ে নিয়েছে, তখন নাগরাজ অনেক ক্ষেপে যায়। ওই নাগরাজের ক্ষোভ এত বেড়ে যায় যে, সেটি একটি ড্রাগনের মতো রূপ ধারণ করে। ফলে তাদের ভাষ্যমতে ওই নাগরাজকে তখন সবাই ভয়ংকর এক অদ্ভুত প্রাণীর মতো দেখাচ্ছিল বলে, নাম দেয় বগা( তাদের ভাষায় ড্রাগনকে বগা বলা হয়)।
এরপর ওই গ্রামটিকে নাগরাজ দাবিয়ে দেয়। প্রচণ্ড ভূমিকম্পের ফলে সেখানে তৈরি হয় বিশাল একটা গর্ত। বৃষ্টির পানি পড়ে সেখানে তৈরি হয় এই বগা লেকের।”
বন্ধুরা তোমাদেরও কি তাই মনে হয়? অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে।
আর হ্যাঁ, আজকের লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই তোমরা Social Media তে এটি Share করবে।
ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্যসূত্রঃ বগাকাইন উইকিপিডিয়া
ইমেইজ ক্রেডিটঃ pexels.com
ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com
0 মন্তব্যসমূহ