Looking For Anything Specific?

ads header

নীলকুরিঞ্জি ফুলের বৈচিত্র্যতা ও প্রস্ফুটিত হওয়ার প্রকৃত সময়!


বন্ধুরা, নীলকুরিঞ্জি ফুলের বৈশিষ্ট কিরকম, কেন একে বিস্ময়কর ফুল নামে অভিহিত করা হয়। তা আমরা ইতোমধ্যে ১ম পর্বে পড়ে এসেছি। যারা পড় নি, তারা অবশ্যই পড়ে আসবে। তোমাদের সুবিধার্থে আমি এর আগের পর্বের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি।

আজকে আমরা জানব, এই ফুলের আর কি কি প্রজাতি আছে? কোথায় কোথায় এই ফুল পাওয়া যেতে পারে? এই ফুল ফোঁটার প্রকৃত সময় কি? এই ফুলকে কেন্দ্র করে কেমন পর্যটনশিল্প গড়ে উঠেছে? সেখান থেকে কি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়? সব প্রশ্নের উত্তর এখানে তোমরা পাবে।

তো চল আর দেড়ি না করে, শুরু করি আজকের পর্ব।

গত পর্বে ফুলের বৈশিষ্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আজকে তাই এর বৈচিত্রতা নিয়ে আলোচনা করা যাক।

তোমরা জানলে অবাক হবে যে, আজ পর্যন্ত এই নীলকুরিঞ্জি ফুলের প্রায় ৫০০ এর অধিক প্রজাতি পাওয়া গেছে। এই ফুলের অবস্থান পৃথিবীর অনেক জায়গায়। আমরা জানি আমাদের এই পৃথিবীতে মোট মহাদেশ ৭ টি। তার মধ্যে শুধু এশিয়াতেই নীলকুরিঞ্জি ফুলের ২৫০ এর অধিক প্রজাতি পাওয়া গেছে। আর এই যে >২৫০ টি প্রজাতি এই এশিয়াতে আছে, তার মধ্যে ৪৬টির মতো প্রজাতি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেই রয়েছে।

এবার আসি এই ফুলের গাছগুলো কত বড় হয়? কত উচ্চতায় এই ফুলগুলো জন্মায়?

এই ফুলগুলো জন্মানোর জন্য নিচু স্থান পরিহার করতে হবে। তার মানে উঁচু স্থানে এই ফুলগুলো ভালো জন্মায়। শুধু উঁচু স্থান নয়, অনেক উচুতে এই ফুলগুলো ভালো জন্মায়। প্রায় ১৩০০ থেকে ২৪০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ই হলো এই ফুল প্রস্ফুটিত হওয়ার আদর্শ স্থান। তবে এখানে একটা শর্ত আছে। আর সেটা হচ্ছে আবহাওয়া ভালো হতে হবে। আবহাওয়া খুব ভালো হলে অবশ্য, এই উচ্চতার থেকে একটু কম উচ্চতার কোনো পাহাড়েও এই ফুল দিব্যি জন্মাতে পারে।
এই ফুলের গাছগুলো বেশী লম্বা হয় না। সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে এই ফুলের গাছগুলো। তবে প্রজাতির বৈচিত্র্যতাভেদে কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক ব্যাখ্যা করা দরকার।
ফুল ফোঁটার ধরণ এর আগের পর্বে বলেছিলাম। কি করে কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটে তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম। কিন্তু, অনেক রকম প্রজাতির বেলায় তো আর একই নিয়মে ফুল ফুটবে না। তাই অনেক রকম প্রজাতি হয় বলে, ফুল ফোঁটার ধরণটাও বিভিন্ন প্রজাতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের এবং ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে/পদ্ধতিতে হয়ে থাকে।

এবার আসা যাক এই নীলকুরিঞ্জি ফুলের ফুল ফোঁটার প্রকৃত সময় কোনটা?
১ম পর্বেই আমরা জেনেছি, এই ফুল এক যুগ পর ফোটে তথা প্রতি ১২ বছরে মাত্র ১ বার ফোঁটে। কিন্তু এই ফুলের তো ৫০০ এর অধিক প্রজাতি পাওয়া গেছে। তাই কিছু কিছু প্রজাতিতে এই নিয়মের ব্যাতিক্রম ঘটে। পৃথিবীতে এই নীলকুরিঞ্জি ফুলের বিভিন্ন প্রজাতি পর্যবেক্ষণ করে যা জানা গেছে তা হলোঃ পৃথিবীতে এই ফুলের এমন কিছু প্রজাতি আছে, যাদের ফুল ফুটতে ১২ বছরের অধিক সময় লাগে। কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে তো ১৬ বছর সময় লেগে যায় ফুল ফুটতে। তবে ১২ বছরে একবার যেসব প্রজাতি ফুল দেয়, তাদেরও একটা বিশেষ নিয়ম আছে।

১২ বছর পর যেকোনো সময়েই, যেকোনো মৌসুমে, যেকোনো মাসেই এই ফুল ফোটে না। এই ফুল ফুটতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের দরকার পড়ে। সাধারণত সব প্রজাতিই যে সময়ের মধ্যে ফুল প্রস্ফুটিত করে সেটা হচ্ছে এই নীলকুরিঞ্জি ফুল ফোঁটার প্রকৃত সময়। আর সেই সময়টাই হচ্ছে জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস। তবে ফুল দিয়ে ভরে যায় এমনও একটা সময় আছে। সে সময়টা হচ্ছে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এসময় ফুলে ফুলে চারদিক মধুরিত করে তোলে এই নীলকুরিঞ্জি ফুলের স্থানটি।

সব প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এখনো হয় নি। কোথায় কোথায় এই ফুল পাওয়া যেতে পারে? এই ফুলকে কেন্দ্র করে কেমন পর্যটনশিল্প গড়ে উঠেছে? সেখান থেকে কি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়? এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এখনো বাকি।

তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এর পরের পর্বেই আমি বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিব।

ধন্যবাদ সকলকে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ