Looking For Anything Specific?

ads header

নীলকুরিঞ্জি ফুল! এ যেন নীল রঙের গালিচা!


বন্ধুরা তোমরা কি এমন ফুলের নাম শুনেছ, যা এক যুগ পর ফুটে? যে ফুল প্রস্ফুটিত হতে ১২ বছর সময় লাগে? নিশ্চয়ই অনেকেই অবাক হচ্ছে। প্রতি ১২ বছরে মাত্র একবার ফুটে এমন ফুল দেখা তো দূরের কথা, অনেকেই এর নামই শুনেনি। তো চল আজকে আমি তোমাদেরকে এই ফুল সম্পর্কে ধারণা দিই।

ফুলটির নাম “নীলকুরিঞ্জি”। নীলকুরিঞ্জি নামটি আমাদেরকে বলেই দিচ্ছে যে এই ফুলের রং নীল। এই ফুল যেখানে ফুটে, মনে হয় সেই স্থান সবুজের বদলে নীল রঙের চাঁদরে ঢাকা পড়ে গেছে। আকাশের নীল রং যেন মাটিতে এসে মিশেছে। তো যাই হোক, এবার চল জেনে নিই, এই ফুলটি কোথায় ফুটে?

এই ফুল দেখতে হলে বেশীদূর নয়, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে গেলেই চলবে। ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় এই অদ্ভুত সুন্দর ফুলটি ফুটে। এই পর্বতমালাটিকে তাই নীলকুরিঞ্জি ফুলের রাজ্যও বলা হয়। যখন এই ফুল ফোটে গোটা পর্বতের সারি ঢাকা পড়ে যায় এক আশ্চর্য নীল রঙের গালিচায়। তখন একে দেখতে অনেকটা আকাশের নীল রঙের মতো দেখায়। এখানকার আদিবাসীরা এই ফুলকে অনেক শুভ মনে করে। তাদের কাছে এই ফুল শুভ বার্তার প্রতীক। নীলকিরিঞ্জি নামটি সর্বাধিক প্রচলিত হলেও স্থানীয়রা মাঝে মাঝে এই ফুলকে অন্য নামেও অভিহিত করে থাকে। তোমরা কি জানো, কি কি নামে ডাকে তারা এই ফুলকে?

স্থানীয়রা এই ফুলকে কুরঞ্জি বা কুরঞ্জিও নামেও ডেকে থাকে।

চল এবার এই ফুলের বৈশিষ্ট কিরকম, সে সম্পর্কে জেনে আসি।

এই নীলকুরিঞ্জি ফুলটির তেমন কোনো বৈশিষ্ট নেই। অন্যান্য জংলি ফুলের মতোই দেখতে এটি। তাই কেউ যদি হঠাৎ করে এই ফুলটিকে দেখে, তার চোখে এই ফুলটি অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলের জংলি ফুলের মতোই লাগবে। কেননা ফুলটি দেখতে অনেকটা ঘন্টার মতো। এই ফুলগুলো সবসময় দলবদ্ধভাবে ফোটে। থোকায় থোকায় সুন্দরভাবে ফোটে এই নীলকুরিঞ্জি ফুলগুলো। এই ফুল বড়ও নয় যে, দূর থেকে কেউ একে দেখলে এই ফুলের প্রতি আকর্ষিত হতে পারে। কিন্তু তবুও কেন এই ফুলকে বিস্ময়কর ফুল বলা হচ্ছে? চল জেনে নিই সে সম্পর্কে।

১মেই বলেছি এই ফুলগুলো থোকায় থোকায় দলবদ্ধভাবে ফোটে। মাইলের পর মাইল এই ফুলগুলো ফোটে। তাই মাইলের পর মাইল যখন এই ফুলগুলো ফোটে, তখন মনে হয় মাইলের পর মাইল জুড়ে কে যেন নীল রঙের গালিচা পেতে দিয়েছে! আকাশ থেকে কে যেন নীল রঙের বৃষ্টি করিয়ে এই সমস্ত মাঠ ভরিয়ে দিয়েছে! সমস্ত পাহাড়ি অঞ্চল যেন সবুজ রঙের সাথে আড়ি করে, নতুন রং, নীল রঙ্গে সজ্জিত হয়েছে!

আর এসব কারণেই যেকোনো মানুষকে আকর্ষিত করে এই ফুলটি। শুধু মানুষই নয়, সব পশুপাখিদের আকৃষ্ট করে এই ফুলগুলো।  

এই ফুলগুলো দেখতে কেমন? চল জেনে নিই।

এই ফুলগুলো দেখতে অনেকটা আগাছার মতো। Sorry, এই ফুলগুলো নয়। এই ফুলের গাছগুলো দেখতে প্রায় আগাছার মতো। এই ফুলের গাছগুলো বছরের পর বছর নিজের মতো করেই বাঁচে-মরে। প্রকৃতির খেয়াল অনুযায়ী এদের জন্ম-মৃত্যু ঘটে। নতুন নতুন পাতা জন্মায়, আবার তা ঝরেও পড়ে।

যখন ফুল ফোটে না, তখন এদেরকে দেখলে জংলি গাছ ছাড়া আর কিছু মনেই হবে না। কিন্তু যখন এসব গাছে কুঁড়ি জন্মাতে শুরু করে তখন যেন প্রকৃতি তার নিজস্ব রূপ যেন বদলাতে থাকে। তোমরা জানলে অবাক হবে যে, কুঁড়ি থেকে ফুল ফোঁটা পর্যন্ত এই ফুলগুলো যেন নতুন নতুন রঙ্গে সজ্জিত হতে থাকে। 

ফুলগুলো যখন রং পাল্টাতে থাকে তখন সেগুলো দেখতে ক্রমিক রঙের মতো লাগে। প্রথমে কুঁড়ি থাকে নীল রঙের। এরপর কুঁড়ি ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে। এসময় ফুলের রং হয় নীলচে বেগুনি। পরে ফুলটি যখন বড় হয়ে যায় তখন বেগুনি রং ধারণ করে। সবশেষে যখন প্রস্ফুটিত হয়, তখন এই ফুলটি ফিকে বেগুনি রং ধারণ করে থাকে।

এসময় এই স্থানটুকু এতো সুন্দর দেখায় যে, বিদেশ থেকেও অনেক পর্যটক এই স্থানে আসে এই ফুলগুলোর সমারোহ দেখতে।

শুধু মানুষেরা নয়। মৌমাছিসহ অন্যান্য কীটপতঙ্গরাও এখানে আসে। বিজ্ঞানীদের মতে মৌমাছিরা এসব ফুলের মিষ্টি গন্ধে পাগল হয়ে বারবার ছুটে আসে এখানে। এখান থেকে তারা মধু নিয়ে যায়। অনেক কীটপতঙ্গরা বংশবিস্তারের নেশায় এখানে আসে।

কিন্তু এই ফুলের কদর রাজকীয় হলে কি হবে, এই ফুলের গাছগুলো অনাদরে, বিনা পরিচর্যায় বেঁচে থাকে যুগের পর যুগ।

বন্ধুরা তোমরা কি জানো এই ফুলগুলো কোথায় কোথায় পাওয়া যায়? যেখানে এই ফুলগুলো ফোটে সেখানে পর্যটকদের কেমন ভীর হয়? এই ফুলের আর কি কি প্রজাতি আছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা এই আর্টিকেলের ২য় পর্বে জানতে পারব।

২য় পর্বের লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ

২য় পর্ব

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ