Looking For Anything Specific?

ads header

নরকের দরজা! মানবসৃষ্ট! বিশ্বাস হয়?


বন্ধুরা, তোমরা কি জানো নরকের দরজা পৃথিবীতে সত্যিই আছে? অনেকেই বলবে, নরকের দরজা পৃথিবীতে ক্যামনে আছে? মৃত্যুর আগে সেটা পেলে কোথায়? আজকের এই পর্বে আমরা এমন এক স্থানের সাথে পরিচিত হবো, যেটাকে নরকের দরজা বলা হয়। আর এখানে আগুনও জ্বলছে।

আমাদের এই পৃথিবীতে আমরা যে কত রকমের অদ্ভুত, রহস্যময় স্থান আছে, তা কেউ বলতে পারে না। আমরা বর্তমানে অনেক অদ্ভুত রহস্য সম্পর্কে জানি। অনেক রহস্যময় স্থান সম্পর্কেও জানি। অদ্ভুত স্থানগুলোর মধ্যে “নরকের দরজা” অন্যতম। ইংরেজিতে একে বলে “ডোর টু হেল”। তো বুঝতেই পারছ, আজকের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে, নরকের দরজা/ডোর টু হেল।

তো চল আর দেড়ি না করে মূল পর্বে যাওয়া যাক।

তুর্কমেনিস্তান দেশ। এর একটি মরুভূমি। নাম তার কারাকুম। এই কারাকুম মরুভুমির মধ্যে অবস্থিত দোয়াজ গ্রাম বা Darvaz। এই গ্রামে একটি গর্ত রয়েছে, যেটাতে গত ৫০ বছর ধরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। এই গর্তটির নামই হলো নরকের দরজা।

দিনের বেলা ততো সুন্দর না লাগলেও রাতের বেলা নরকের এই দরজাটি খুবই সুন্দর লাগে। তখন অনেক দূর থেকেও এই জায়গাটি দেখাও যায়। এর শিখা তখন অনেক উজ্জ্বল দেখায়। এর আশেপাশে তখন এত উত্তাপ থাকে যে, কেউ চাইলেও এর আশেপাশে ৫ মিনিটের বেশী সেখানে থাকতে পারে না। এটা অনেক সুন্দর দেখতে বলে এই নরকের দরজা দেখতে প্রতিবছর অনেক পর্যটক এই কারাকুম মরুভূমির দোয়াজ গ্রামে আসে।

এই নরকের দরজার অগ্নিমুখটির ব্যাস ৭০ মিটার ও গর্তটি প্রায় ২০ মিটার দীর্ঘ। আর তোমরা জানলে অবাক হবে যে, এই নরকের দরজাটি কোনো প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় নি। মানুষের দ্বারা তা সৃষ্টি হয়েছে। তো চল জেনে নিই সেই ইতিহাস।

এটা কি করে সৃষ্টি হলো? কেন আগুন জ্বলছে? জানতে চাও? তবে আমাদেরকে ৫০ বছর আগে যেতে হবে।

১৯৭১ সাল। আমাদের দেশে তখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিল। তখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এর কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস সন্ধানকারীরা প্রাকৃতিক গ্যাস সন্ধানে তুর্কমেনিস্তান দেশের কারাকুম মরুভূমির মধ্যে আসে। সেখানে তারা দোয়াজ গ্রামে অনেক প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার কথা আশা করে। সৌভাগ্যবশত তারা সেখানে গ্যাসবহুল গুহা খুঁজে পায়। এই গুহা থেকে তারা গ্যাস উত্তোলনের কথা চিন্তা করে। যেই ভাবনা সেই কাজ। তারা ওই গুহাতে ড্রিলিং রিগ দিয়ে গর্ত করতে শুরু করে। এসময় খানিক খনন করার পরেই দুর্ঘটনা ঘটে। মাটি ধ্বসে পড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, একসময় ড্রিলিং রিগসহ সব মাটি ধ্বসে পড়ে যায়। তারপরেই সৃষ্টি হয় বিশালাকার গর্তের। সেখানে ভূতত্ত্ববিদরা দেখতে পান যে এই গর্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস বের হচ্ছে। এই মিথেন গ্যাস খুবই বিষাক্ত। শুধু বিষাক্তই নয়, পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই এখানে গবেষকরা প্রাথমিকভাবে গবেষণা করতে শুরু করেন। তারা প্রাথমিকভাবে গবেষণা করে জানতে পারেন যে, এখানে গ্যাস এর পরিমাণ খুবই সীমিত। আর এই সীমিত গ্যাসকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত গ্যাস পুড়ে শেষ হয়ে যাবে। ফলে এই বিশাক্ত গ্যাস পরিবেশের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না। তাই এখানে ভূতত্ত্ববিদরা আগুন জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজটি বাস্তবায়ন করার জন্য আরও একটু গর্ত করা হয়। এরপর এখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তাদের বিশ্বাস ছিল, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত গ্যাস আগুনে জ্বলে শেষ হয়ে যাবে।

কিন্তু তাদের বিশ্বাস আর ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে এই গর্তটি জ্বলতেই থাকে মাসের পর মাস। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে জলছে। এখনো জ্বলছে এই আগুন। হয়তো জ্বলবে আরও অনেক বছর ধরে। ততদিন হয়তো আমরা বেঁচে নাও থাকতে পারি।

তো বন্ধুরা কেমন লাগলো এই নরকের দরজাকে। কমেন্ট করে জানাতে ভুলবে না যেন। আর ভালো লাগলে অবশ্যই Social Media তে Share করবে।
ধন্যবাদ সকলকে।

তথ্যসূত্রঃ নরকের দরজা উইকিপিডিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ