Looking For Anything Specific?

ads header

"বানরের পাউরুটি" নামে সত্যি কি কোনো ফল আছে?


বানরের পাউরুটি ফল নামে খ্যাত বিশ্বে অবাক করা বাওবাব গাছ। এই গাছের ফলকে বানরেরা তৃপ্তি করে খেতে পছন্দ করে। আর একটি ফল প্রায় ১.৫ কেজি ওজনের মতো হয় এবং দেখতে নারকেলের মতো বলে একে Monkey Bread বা বানরের পাউরুটি বলে।

আমাদের এই পৃথিবীতে গাছপালা আমাদেরকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে। ফলে গাছের সাথে আমাদের একটি অটোমেটিক রিলেশন তৈরি হয়। বিশ্বে যে কত রকমের গাছ আছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। তাদের মধ্যে আবার এমন কিছু গাছ আছে, যাদের দেখলে আমাদের অদ্ভুত মনে হয়। কারণ তারা দেখতেই যে অদ্ভুত রকম। ফলে অদ্ভুতরা ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নামকে স্মরণীয় করে রাখে।

তেমনই একটি অদ্ভুত গাছ হচ্ছে বাওবাব গাছ। এই গাছের ফলগুলো বেশ বড় আকারের। এদের একেকটি ফলের ওজন প্রায় দেড় কেজি। আর এই ফলগুলো আমাদের দেশে যে নারকেল পাওয়া যায়, ঠিক সেরকম দেখতে। এই ফলগুলো এত লোভনীয় যে, বানরেরা তাদের লোভ সামলাতে পারে না। এর ফলে এই ফল বাওবাব গাছে ধরলেই বানরেরা এই ফলকে খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে যায়। এই ফলকে বানরেরা তৃপ্তি করে খায় বলে ফলটির নামই রাখা হয়েছে মাঙ্কি ব্রেড, বাংলায় যাকে বানরের পাউরুটি বলে।

কিন্তু এই ফলটি যে গাছে ধরে তার সম্পর্কে কি তোমরা জানতে চাও না? জানতে চাও না, এই বিখ্যাত ফলটি কোথায় পাওয়া যায়? চল তাহলে জেনে নিই এই গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

অবস্থান ও পরিচয়ঃ
বাওবাব গাছ। এই গাছটির গণ হচ্ছে Adansonia । এই গাছটি প্রধানত আফ্রিকা এবং আরবের শুষ্ক, মরু-ভুমিতে পাওয়া যায়। কারণ এটি শুষ্ক ভুমিতে জন্মায়। মূলত এটি আফ্রিকান গাছ, তবে এর কিছু প্রজাতি মাদাগাস্কার দ্বীপ, আরব উপদ্বীপ এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে পাওয়া যায়। বাওবাব গাছের নয় প্রকার প্রজাতি আছে, যার মধ্যে বেশী সংখ্যক গাছ জন্মায় ২টি প্রজাতিতে। আর ওই ২ টি প্রজাতিই আফ্রিকান আদিবাসী। বাকি ৭টি প্রজাতি জন্মায় মাদাগাস্কার, আরব উপদ্বীপ আর অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে। আর আমরা যদি সুস্পষ্ট তথ্য পেতে চায়, তাহলে সেটা হবে এরকমঃ

১) আফ্রিকায় জন্মায় ২টি প্রজাতি

২) আরবেও জন্মায় ২টি প্রজাতি

৩) অস্ট্রেলিয়ায় জন্মায় ১টি

৪) আর বেশী পরিমাণ প্রজাতি জন্মায় মাদাগাস্কায়। মাদাগাস্কায় জন্মায় Adansonia  গণের ৬টি প্রজাতি।

তাহলে অনেকেই আবার প্রশ্ন করবে যে, ভাই আপনি ১মে তো ৯টি প্রজাতির কথা বললেন, এখন তো হিসাব করলে ২+২+১+৬=১১টি প্রজাতি হয়ে যাচ্ছে। আসলে আরবে আর আফ্রিকায় একই প্রজাতি জন্মায়। আরবে যে ২ টা প্রজাতি জন্মায়, আফ্রিকায়ও সে ২ টা প্রজাতি জন্মায়।

গাছটির উচ্চতাঃ
এটি তালগাছের মতোই খাঁড়া উপরের দিকে উঠে গেছে। অর্থাৎ, এটি প্রায় তালগাছের মতোই লম্বা। এই গাছ লম্বায় প্রায় ৫ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হয়।

কোন মাটিতে জন্মায়ঃ
এই গাছটি ১মেই বলেছি শুষ্ক মাটিতে জন্মায়। রুক্ষ মাটিতেও এটি দিব্যি জন্মায়। এমনকি খুব কর্কশ মাতিতেও এটি জন্মাতে পারে। 

কত বছর বাঁচেঃ
এরা দীর্ঘজীবী। গাছগুলোর বয়স প্রায় ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার বয়স। কল্পনা করা যায় কত বছর বাঁচে এরা। এদের যে গুঁড়িগুলো আছে, সেগুলো এতই লম্বা যে ৩২ হাজার গ্যালন পানি ধারণ করতে সক্ষম। গ্যালন হচ্ছে পরিমাপের একটি একক। ১ গ্যালন সমান ৪.৫৪৬ লিটার। তাহলে লিটার হিসাবে, গুঁড়িগুলো প্রায় ১৪৫,৪৭২ (কথায় এক লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার চার শত বাহাত্তর) লিটার পানি ধারণ করতে সক্ষম। ফলে একবার পানি পেলে এদের বছর কা বছর পানির প্রয়োজন হয় না। কারণ এরা অনেক বেশী পানি এরা ধারণ করতে পারে। যার ফলে, রুক্ষ মাতিতেও এরা অনেক বছর টিকে থাকতে পারে। আর তাই এরা দীর্ঘজীবী।

কি কি কাজে লাগেঃ
১) এর ছাল নরম, আগুন প্রতিরোধী এবং তন্তুযুক্ত হওয়ায় এটির ছাল দিয়ে কাপড় ও দড়ি তৈরি করা হয়।

২) গ্রীষ্মে এর পাতা চকচকে ও সবুজ থাকে বলে এতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে।

৩) এর পাতা দিয়ে তখন মশলা ও ঔষধ তৈরি হয়।

শীতকালে এর পাতা পড়ে যায়, কারণ এটি পাতলা প্রকৃতির গাছ। শীত আসলেই এরা এদের পাতা হারাতে থাকে। তবে এর ফুলগুলো বেশ বড় আকারের হয়, যা গোঁড়ার দিকে ফুটে। সাধারণত এগুলো বিকেলবেলা তাদের পাপড়িগুলো মেলে, সারা রাত ধরে মেলে থাকে। সকালবেলা বন্ধ হয়ে যায়। আর এসময় অনেক সুন্দর গন্ধ বের হয়।

তো বন্ধুরা কেমন লাগলো আজকের এই বানরের পাউরুটি ফলের ধারক বাওবাব গাছটিকে? অবশ্যই কমেন্ট করে উত্তর জানাবে। এখান থেকে কি কি তোমরা শিখতে পারলে তাও কমেন্ট করে জানাবে।

ধন্যবাদ সকলকে।

তথ্যসূত্রঃ বাওবাব গাছ উইকিপিডিয়া

ইমেইজ ক্রেডিটঃ unsplash.com

ইমেইজ ডিজাইনঃ canva.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ